গরম মসলার দাম না বাড়লেও বেড়েছে এলাচের দাম

।। ভোক্তাকণ্ঠ ডেস্ক ।।
ঈদ-উল-আজহায় গরম মসলা পরিমাণে একটু বেশিই লাগে। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দেন। তবে এবার গরম মসলার দাম বাড়েনি, উল্টো এলাচের দাম কমেছে।

তবে শুকনো মরিচের দাম বেড়ে গেছে। একইসঙ্গে কিছুটা বেড়েছে জিরার দাম। এছাড়াও তেজপাতা ও ধনের দামও কিছুটা বেড়েছে।

এবার ঈদ কেন্দ্রিক গরম মসলার দাম না বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং বন্যার কারণে এবার বিক্রি অনেক কম হয়েছে। অপরদিকে গরম মসলা আমদানি হয়েছে বেশি। ফলে চাহিদার তুলনায় জোগান বেশি হওয়ায় দাম বাড়েনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাইকারিতে মানভেদে এখন এলাচের কেজি বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ২০০ থেকে দুই হাজার ২০০ টাকা। এক মাস আগে এলাচের কেজি ছিল এক হাজার ৪০০ থেকে দুই হাজার ৪০০ টাকা। এ হিসাবে কেজিতে এলাচের দাম কমেছে ২০০ টাকা পর্যন্ত।

এলাচের দাম কমলেও স্থিতিশীল রয়েছে লবঙ্গ ও দারুচিনির দাম। পাইকারিতে লবঙ্গের কেজি বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৪০ থেকে এক হাজার ৬০ টাকা। এছাড়া দারুচিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩১০ থেকে ৩৯০ টাকা।

অপরদিকে, ভারত থেকে আমদানি করা জিরার দাম কিছুটা বেড়ে এখন ৩৮৫ থেকে ৩৯০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। কিছু দিন আগে যা ছিল ৩৮০ থেকে ৩৮৫ টাকা। অর্থাৎ ভারত থেকে আমদানি করা জিরা পাইকারিতে কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়েছে। তবে আফগানিস্তান থেকে আমদানি করা জিরা আগের মতো ৪০০ থেকে ৪১০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

ব্যবসায়ী মো. রুবেল বলেন, ঈদের আগে এবার ভারতীয় জিরা ছাড়া কোন মসলার দাম বাড়েনি। বরং এলাচের দাম কমেছে। আর দারুচিনি ও লবঙ্গের দামে কোন পরিবর্তন হয়নি। ভারতীয় জিরার সরবরাহ কম থাকায় কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়েছে। কিছুদিন আগে আমরা ভারতীয় জিরার কেজি ৩৮০ টাকা বিক্রি করেছি, এখন ৩৮৫ টাকা বিক্রি করছি।

এদিকে খুচরা বাজারে দেখা গেছে, দারুচিনির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৬০ টাকা। এলাচ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার ৮০০ টাকা। জিরার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। লবঙ্গের কেজি বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা।

গরম মসলা না বাড়লেও শুকনো মরিচের দাম বেড়ে গেছে। দেশি শুকনো মরিচের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, যা কিছু দিন আগে ছিল ২২০ থেকে ২৬০ টাকার মধ্যে। আর আমদানি করা শুকনো মরিচের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪২০ টাকা, যা কিছুদিন আগে ছিল ৩০০ থেকে ৩৮০ টাকা।

কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী মো. রাজু বলেন, বাজারে আমদানি করা শুকনো মরিচের সরবরাহ কম। দেশি শুকনো মরিচও কম আছে। এ কারণে দাম একটু বেড়েছে। তবে শুকনো মরিচের এই বাড়তি দাম খুব বেশি দিন থাকবে না।

এদিকে, পেঁয়াজ, রসুন, আদার দাম স্থিতিশীল রয়েছে। দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। দেশি রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৯০ টাকা। আমদানি করা রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৫০ টাকা। আদার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা।

তবে কিছুটা বেড়েছে তেজপাতা ও ধনের দাম। তেজপাতার কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, যা কিছুদিন আগে ছিল ১৫০ থেকে ১৭০ টাকার মধ্যে। আর ধনে বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৭০ টাকা, যা কিছুদিন আগে ছিল ১২০ থেকে ১৫০ টাকার মধ্যে।

ঈদের আগে মসলার দামে অস্থিরতা দেখা না দেওয়ায় খুশি ক্রেতারা। রামপুরা বাজারে বিভিন্ন ধরনের মসলা কিনতে আসা আলেয়া বেগম বলেন, আমাদের কোরবানি দেওয়ার সামর্থ্য নেই। কোরবানি না দিলেও ঈদের দিন ভালোই মাংস পাবো। অনেক দিন হয়ে গেছে গরুর মাংস খাওয়া হয়নি। আল্লাহ মেহেরবানি করলে ঈদের দিন পরিবারের সবাই মিলে তৃপ্তি করে গরুর মাংস খাবো। এ জন্য কিছু মসলা কিনে নিয়ে যাচ্ছি।

মসলার দাম কেমন? এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি ২০ টাকা, ৫০ টাকা করে মসলা কিনেছি। আমাদের পক্ষে তো কেজি কেজি কেনা সম্ভব না। তাই শুনিনি। তবে ২০ টাকা, ৫০ টাকায় ভালোই মসলা দিয়েছে।